ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৩
SylhetNews24.com
শিরোনাম:

নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই নবজাতক নিয়ে তুলকালাম

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ আগস্ট ২০২২  

বাচ্ছা হওয়ার কথা দুটি। অপারেশনের পর অভিভাবকদের দেয়া হয়েছে একটি। অপরটি চুরি করা হয়েছে অভিযোগে তুলকালাম হচ্ছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল এলাকার নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বাচ্চা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেও সমাধান হয়নি। তবে বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় এ ঘটনায় পুনরায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি।

পুলিশ, ভুক্তভোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার সকালে প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন দক্ষিণ সুরমার তেতলি এলাকার প্রবাসী মাসুক মিয়ার স্ত্রী শারমিন বেগম। তিনি সেখানে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজপত্র নেন সংশ্লিষ্টরা।

এর কিছুক্ষণ পর শারমিনের অস্ত্রোপচারে একটি সন্তান প্রসব হয়। কিন্তু তার আত্মীয় স্বজন দুটি বাচ্চার কথা জিজ্ঞেস করলে কর্তব্যরতরা কোনো সদোত্তর দেননি। পরবর্তীতে আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট দেখাতে বললে সেটা না দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান কর্তব্যরতরা। চিকিৎসাসেবা শেষে রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেন।

তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস করেন। তবে রোগীর স্বজনরা একাধিকার বিষয়টি জানতে চাহিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে হাসপাতালে রোগীর স্বজনরা গেলে অসদাচরণ করেন দায়িত্বশীলরা। এর জেরে হাসপাতালের লোকজন ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে হাসপাতালের বিভিন্ন জিনিসপত্র ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উভয় পক্ষকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক করে। তবে বৈঠকে বসলেও হাসপাতালের সকল পরিচালক না থাকায় এর সুষ্ঠু সমাধান করা যায়নি।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর দেবর নিজাম উদ্দিন বলেন- আমরা তাদের কথা মতো আলট্রাসনোগ্রাফি করাই। এতে বলা হয় আমার ভাবির দুটি সন্তান জন্ম নিবে এবং তারা সুস্থ রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে আসার পর আমার ভাবির সিজার করা হলে একটি সন্তান আমাদের কাছে এনে দেয়া হয়। বাস্তবে আমাদের দুটি সন্তান দেয়ার কথা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আমরা জিজ্ঞেস করলে কোনো সদুত্তর পাইনি। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাই। শনিবার ঘটনা ঘটলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের বিষয়টি মঙ্গলবার চলে এলেও জানান নি। আমরা হাসপাতালে এসে বিষয়টি জানতে চাহিলে কর্তব্যরতরা আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা আমাদের উপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার স্বার্থে আমরা প্রতিহত করি।

তিনি আরও বলেন- আমাদের নিয়ে বৈঠক করা হলেও পরিচালকদের অনেকেই অনুপস্থিত থাকায় বিষয়টির সুরাহা হয়নি। আগামীকাল বুধবার দুপুর ১২ টায় আমাদের নিয়ে পুনরায় বৈঠক হবে বলে জানান তিনি।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন- আমাদের হাসপাতালে এসে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে সবকিছু ভেঙে দেয় তারা। এতে আমাদের হাসপাতালের বিভিন্ন জিনিসপত্র ভেঙে চুরমার করে ফেলে। এ ঘটনার আগ মুহুত্ব পর্যন্ত আমরা কিছু জানি না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দিলেও সেটা গ্রহণ করেনি।

তবে দক্ষিণ সুরমা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার চৌধুরী বলেন- আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। এ তথ্য সঠিক নয়। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা অবশ্যই নেবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

তিনি বলেন, ঘটনার পরপর খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

আরও পড়ুন
এক্সক্লুসিভ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত