ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
SylhetNews24.com
শিরোনাম:

আনোয়ারের শিক্ষাগত ও বাবুলে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কুটু

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২৩  

আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল হানিফ কুটু।

নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল হানিফ কুটু নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে এই প্রশ্ন তোলেন।  শনিবার (১৭ জুন) সকালে নগরীর টিলাগড়রস্থ নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হানিফ কুটু ১৫ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে বলেন, নগরবাসীর সহযোগিতা ও পরামর্শে আমি এই নগরকে জলাবদ্ধতা ও দুর্নীতিমুক্ত একটি স্মার্ট, জনবান্ধব নগর হিসেবে গড়তে চাই। 

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রতি ইঙ্গিত করে কুটু বলেন, তিনি তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতায় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও প্রশ্ন ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর দাবি, এইধরনের অভিযোগ ভুয়া, এবং তিনি সঠিক তথ্যই দিয়েছেন।

কুটু বলেন, তিনি (আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী) হলফনামায় উল্লেখ করেছেন বি.এ (সম্মান) পাস। এটা কীভাবে সম্ভব? তিনি কোন কলেজ থেকে ইন্টার এবং সম্মান পাস করেছেন? আমার জানামতে তিনি কুমিল্লা থেকে এসএসসি পাস করে যুক্তরাজ্যে চলে যান। এসব যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হলেও রহস্যজনক কারণে তা মানা হয়নি।

আব্দুল হানিফ কুটু নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে বলেন, আমি ১৯৮৬ সালে সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও মুরারিচাঁদ কলেজ (এমসি) থেকে এইচএসসি পাস করি। তার পূর্বে আমি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হই।

জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল সম্পর্কেও কথা বলেন কুটু। তিনি বলেন, তাঁর (নজরুল ইসলাম বাবুল) নৈতিক স্খলনজনিত বিষয়টি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হলেও তাঁর বিরুদ্ধেও নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

উল্লেখ্য, গত সোমবার এ কে এম আবু হুরায়রা সাজু নামে সিলেট নগরের নরসিংটিলা এলাকার এক বাসিন্দা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ করেন।

আবু হুরায়রা রাজু তার লিখিত অভিযোগে বলেন, আনোয়ারুজ্জামান তাঁর হলফনামায় জন্মতারিখ ১৯৭০ সালের ১ জুলাই এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (সম্মান) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি ১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮৪২০৮ এবং শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৬-১৯৮৭। রেজিস্ট্রেশন, প্রবেশপত্র ও সনদপত্র অনুযায়ী জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ১ জুলাই। পরবর্তী সময়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর জন্মতারিখ পরিবর্তন করার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেছিলেন, যা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নামন্জুর করে। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৯৯০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই বাংলাদেশ ইয়ুথ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাজ্যে যান এবং সেখানে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। 

পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশে কোনো প্রকার পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষায় অংশ নেননি। এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পাসপোর্টের জন্মতারিখের সঙ্গে এসএসসির সনদে উল্লেখিত জন্মতারিখে গড়মিল আছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, ‘মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের আগে অভিযোগ পেলে তথ্য যাচাই-বাছাই করা যেত। এখন আমাদের আর কিছুই করার নেই।’ আর মেয়রপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ভুয়া ও মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক। হলফনামায় সঠিক তথ্যই দিয়েছি।’

আগামী ২১ জুন পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হানিফ কুটুসহ ৮ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।তবে ঘোষনা দিয়ে মেয়র প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সঢ়ড় পড়েছেন হাতপাকার প্রার্থী।

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত